মুশফিকের সেঞ্চুরি: বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ক্রিকেটে শক্তিশালী জবাব - Probash Bangla Tv | প্রবাস বাংলা টেলিভিশন

Breaking

Post Top Ad

শনিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৪

মুশফিকের সেঞ্চুরি: বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ক্রিকেটে শক্তিশালী জবাব

মুশফিকুর রহিম রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে চতুর্থ দিনে অসাধারণ এক ইনিংস খেলে ম্যাচের গতি সম্পূর্ণভাবে পরিবর্তন করে দেন। তিনি ১৯১ রানের একটি অসাধারণ ইনিংস খেলেন, যা তার টেস্ট ক্যারিয়ারের ১১তম শতক এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম। এই ইনিংসে তিনি ধৈর্য, নিয়ন্ত্রিত আক্রমণাত্মক মনোভাব এবং দৃঢ় টেকনিকের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ম্যাচের দায়িত্বে নিয়ে আসেন।


ম্যাচের পরিসংখ্যান:

  • মুশফিকুর রহিম: ১৯১ রান (৩৬৩ বল), ২০টি চার, ১টি ছক্কা
  • মেহেদি হাসান মিরাজ: ৭৭ রান (১৭৪ বল), ৭টি চার
  • বাংলাদেশের ইনিংস: ৫৬৫ রান (১৭৪.৪ ওভার)
  • লিড: ১১৭ রান
  • পাকিস্তানের প্রথম ইনিংস: ৪৪৮ রান

দিনের শুরু:

বাংলাদেশ দিন শুরু করে ৩১৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে, যেখানে তারা পাকিস্তানের চেয়ে ১৩২ রানে পিছিয়ে ছিল। পাকিস্তানের পরিকল্পনা ছিল দ্রুত উইকেট তুলে নিয়ে প্রথম ইনিংসে লিড নেওয়া, কিন্তু মুশফিকুর রহিম ও মেহেদি হাসান মিরাজের দৃঢ় প্রতিরোধ সেই পরিকল্পনা ভেস্তে দেয়। মুশফিক তার ইনিংসের প্রথম অংশে ধীরগতিতে রান তুললেও, লিটন দাস আউট হওয়ার পর তার ইনিংসের গতি বাড়ান।

মুশফিকের পার্টনারশিপ:

  • লিটন দাসের সঙ্গে: ১০০ রানের পার্টনারশিপ
  • মেহেদি হাসানের সঙ্গে: ১৯৬ রানের পার্টনারশিপ

মেহেদি হাসান মিরাজের সঙ্গে এই ১৯৬ রানের জুটি বাংলাদেশকে বড় লিড নেওয়ার পথে নিয়ে যায়। মিরাজের ৭৭ রানের ইনিংসটি ছিল তার টেস্ট ক্যারিয়ারের সপ্তম অর্ধশতক এবং দেশের বাইরে দ্বিতীয়।

মুশফিকের ইনিংসের বিশদ:

মুশফিক তার ইনিংসে প্রথমে ধৈর্যের পরিচয় দেন, কিন্তু লিটন দাস আউট হওয়ার পর তিনি দ্রুতগতিতে রান তুলতে শুরু করেন। নাসিম শাহের শর্ট বলের ফাঁদে পড়ে লিটন আউট হওয়ার পর, মুশফিক মাত্র ২০ বলে ৭৩ থেকে ১০০ রানে পৌঁছান। তিনি পাকিস্তানি স্পিনারদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে ব্যাট চালান, বিশেষ করে খুররম শাহজাদের বলে। তিনি এক ওভারে দুটি চার মারেন এবং শাহীনের বলে একটি চমৎকার স্ট্রেট ড্রাইভ করে ৮৮ রানে পৌঁছান।

মুশফিকুর রহিম যখন ১২৬ রানে ব্যাট করছিলেন, তখন তাকে আউট করার একটি সুযোগ এসেছিল যখন তিনি আগা সালমানের বলে স্কয়ার লেগে একটি ক্যাচ দেন, কিন্তু বলটি সাউদ শাকিলের হাতে পৌঁছানোর আগেই মাটিতে পড়ে। মুশফিক ধৈর্য্য না হারিয়ে সালমানের পরের বলেই তাকে লং অনের উপর দিয়ে ছক্কা মেরে দলের শতরানের পার্টনারশিপ সম্পূর্ণ করেন।

পাকিস্তানি বোলারদের সংগ্রাম:

মোহাম্মদ আলি, শাহিন শাহ আফ্রিদি এবং নাসিম শাহ প্রচেষ্টার পরেও মুশফিককে সমস্যায় ফেলতে পারেননি। ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রায়, পাকিস্তানের বোলাররা ১০০ ওভারের বেশি বল করে ক্লান্ত হয়ে পড়ে।

বাংলাদেশের প্রতিরোধ:

দিনের শেষের দিকে, বাংলাদেশের পেসাররা পাকিস্তানকে চাপে ফেলে এবং সাইম আয়ুবকে আউট করেন। শরিফুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ পাকিস্তানকে মাত্র ২৩ রানে সীমাবদ্ধ রেখে ১০ ওভারে একটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন।

শেষ সেশনে মুশফিকুর রহিম আউট হয়ে গেলে, শরিফুল ইসলাম ১৪ বলে ২২ রান করে বাংলাদেশের স্কোরে আরো কিছু রান যোগ করেন। শাহিন শাহ আফ্রিদি নতুন বল নিয়ে বাংলাদেশের শেষ তিনটি উইকেট তুলে নেন, পাকিস্তানকে ৩৭ রানে বেঁধে রাখেন।

মুশফিকুর রহিমের অসাধারণ ইনিংস এবং মেহেদি হাসানের সহায়তায় বাংলাদেশ শুধু লিড নেয়নি, বরং ম্যাচের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। শেষ দিনে পাকিস্তানকে পরাজিত করতে বাংলাদেশের হাতে তিনটি সেশন ছিল।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post Top Ad